Header Ads

নরসিংদীতে অপহরণের পাঁচ দিন পর নদী থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার

 


নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় অপহরণের পাঁচ দিন পর ব্রহ্মপুত্র নদে ভাসতে থাকা অনয় চন্দ্র মোদক (১৩) নামের এক শিশুর গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের দীঘলিয়াকান্দী গ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।


শিশু অনয় চন্দ্র মোদক বেলাব উপজেলার মাটিয়ালপাড়া এলাকার গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোদকের ছেলে ও বেলাব সরকারি পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।


পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ বেলা ৩টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে অবস্থান করার সময় একটি লাশ ভেসে থাকতে দেখেন। ঘটনাটি বেলাব থানায় জানালে বিকেল ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার শুরু করে পুলিশ। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ সময় অপহরণের শিকার অনয়ের বাবা গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোদক ঘটনাস্থলে এসে পরনের পোশাক দেখে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন।


গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোদক বলেন, ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় খাতা কেনার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল অনয়। এর পর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ওই রাতেই বেলাব থানায় ছেলে নিখোঁজ মর্মে একটি জিডি করেন। পরদিন একটি নম্বর থেকে তাকে কল করে ছেলেকে ফেরত পেতে চাইলে তখনই এক লাখ টাকা বিকাশ করতে বলা হয়। ওই সময় ২০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠানোর পর নম্বর বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরই ১৬ তারিখে অপহরণের মামলা করা হয়।


তিনি বলেন, ‘আজ নদে ভাসতে থাকা ছেলের পচেগলে যাওয়া লাশ পেলাম। আমার ছেলেকে যারা অপহরণের পর হত্যা করে লাশ নদে ফেলে দিয়েছে, আমি তাদের বিচার চাই।’


পুলিশ বলছে, ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শিশুটিকে অপহরণ করার পর ফোন করে বিকাশে মুক্তিপণ চাওয়ার ঘটনা তদন্ত করে দেখা গেছে, ওই বিকাশ নম্বরটি ভোলার লালমোহন এলাকায় নিবন্ধনকৃত। ওই এলাকায় গিয়ে বেলাব পুলিশের একটি দল এখনো অভিযান চালাচ্ছে। এরই মধ্যে একজন গ্রেপ্তারও হয়েছেন। আজ শিশুটির লাশ বেলাব উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উদ্ধার করা হলো। এ ঘটনায় যারা অপহরণ করেছেন ও যাঁরা বিকাশে মুক্তিপণ আদায় করেছেন, তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক খোঁজা হচ্ছে। এই ঘটনায় যাঁরা যাঁরা জড়িত, তাঁদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।


বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুব রহমান বলেন, লাশের যে অবস্থা তাতে ধারণা করা হচ্ছে অপহরণের পরপরই শিশুটিকে হত্যা করে লাশ নদে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে। শিশুটির পরনের পোশাক দেখে লাশ শনাক্ত করেছেন তার বাবা। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা এসে আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।

No comments

Powered by Blogger.